আদর্শ হিন্দু হোটেল, বুক রিভিউ

 বই লেখক: বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়


বাতিঘর থেকে ছোট্ট একটা বই কিনতে গিয়ে ভাবলাম, শুধু একটাই বই কিনবো? তখন অ্যাড অন করে নেওয়া হল বইটা।


বইয়ের নামটাই প্লট বলে দেয়। হাজারী ঠাকুর রানাঘাটে বেচু চক্রবর্তীর হোটেলে কাজ করে প্রায় ছ-সাত বছর। যথেষ্ট গুণী রাধুনী, কিন্তু চাকুরী দেনেওয়ালারা সে ব্যাপারে সমঝদার নয়। এরকম একটা পরিস্থিতিতে শুরু হয় গল্প।


বিভূতিভূষণ তার সুন্দর লেখনিতে বইয়ের সাথে আকৃষ্ট করে রাখে পাঠককে। অসুবিধা হলো এই যে, বইটা আমার ভীষণ একঘেয়ে লেগেছে। বইয়ের প্লট আর চরিত্র সবই বেশ প্রেডিক্টেবল আর একঘেয়ে। 


হাজারি চরিত্রটাকে লেখক বেশ ভালোভাবে রুপ দিয়েছেন। চাকুরে পার্সোনালিটি, মানুষের সামনে নিচু হয়ে থাকা, মনিব শ্রেণীকে অযথাই সমীহ করা—এসব বেশিক্ষণ পড়তে ভালো লাগছিল না। আমি বলবো, হাজারী আমাকে চমকাতে পারেনি, আর সেটাই হয়তো আমার বিরক্তি লাগার কারণ।


অন্য কোন চরিত্রও পাইনি, যেটা খুব আকৃষ্ট করবে আমাকে। সব চরিত্র মনে হয়েছে কোন না কোন বইয়ে বা নাটকে অলরেডি দেখা হয়ে গেছে। 


বইয়ের মাধ্যমে জানতে পারলাম যে—সে সময় ভাতের হোটেল কেমনে চালানো হতো। ফার্স্ট ক্লাস, থার্ড ক্লাস এরকম ব্যবস্থা ছিল হোটেলে খাওয়ার। বইয়ে বারবার উঠে এসেছে ব্রাহ্মণ, কায়স্থ জাত, ছোঁয়াছুঁয়ি নিয়ে সাবধানতা। এসব বেশ সহজাতভাবেই উঠে এসেছে। নারীর ক্ষমতাহীনতা, নারীর বৈধব্যের প্রতি সকলের করুণ দৃষ্টি—এসব গল্পচ্ছলে লেখায় উঠে এসেছে। সে সব গল্প বইয়ে প্রাধান্য পায়নি, শুধু হাজারী ও তার হোটেল গল্পের শেষ পর্যন্ত মুখ্য ছিল। আর এটাই আরেকটা বড় একঘেয়ে লাগার কারণ।


বিভূতির অন্য লেখার কাছে গল্প ও চরিত্র বেশ শ্যালো লেগেছে। এটা হয়তো আমার অতিরিক্ত এক্সপেক্টেশন এর কারণ। আর হ্যাঁ পপুলার বই বলেও হয়তো এক্সপেক্টেশন টা বেশি ছিল। যাক গে, আরণ্যক পড়ে বেশ অভিভূত হয়েছিলাম। হাজারী ভালো রাঁধলেও গল্পে আমাকে জমাতে পারেনি।




Comments

Popular Posts